Rice Cultivation Advanced Technology (আধুনিক পদ্ধতিতে আমন ধান ও ধানবীজ উৎপাদন প্রযুক্তি)
আধুনিক পদ্ধতিতে আমন ধান ও ধানবীজ উৎপাদন প্রযুক্তিঃ
সার ব্যবস্থাপনাঃ ১ একর জমির জন্য (১ একর = ১০০ শতাংশ)
ইউরিয়া টিএসপি/ডিএপি এমওপি দস্তা সার ম্যাগ. সার সালফার জিপসাম
৬০-৬৫ কেজি ৪০-৪৫ কেজি ৩০-৩৫ কেজি ৫ কেজি ৭-৯ কেজি ৩ কেজি ৩০ কেজি
জমি শেষ চাষের পূর্বে সবটুকু টিএসপি, এমপি, দস্তাসার (মুক্তাপ্লাস), ম্যাগ সার (ম্যাগপ্লাস), সালফার (হেসালফ), জিপসাম (সয়েলজীপ) সার প্রয়োগ করা উচিত ।
ইউরিয়া সার প্রয়োগ নিম্নরুপঃ-
বিনা ধান ৭ ও ১৭:- চারা রোপণের ৭-৮ দিন, ১৮-২০ দিন ও ৩০-৩৫ দিন পর তিন কিস্তিতেবিআর ১১ :- চারা রোপণের ৭-৮ দিন পর, ২০-২৫ দিন পর এবং ৫৫-৬০ দিন পর তিন কিস্তিতে
ব্রিধান ৩২, ৩৪ ও ৪৯:- চারা রোপণের ৭-৮ দিন পর, ২০-২৫ দিন পর এবং ৪০-৪৫ দিন পর তিন কিস্তিতে । লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সুগন্ধি ধানে ইউরিয়ার পরিমনি সাধারনত কম লাগে ।
ব্রিধান ৬২ ও ৭২:- চারা রোপণের ১০ দিন পর, ২০-২৫ দিন পর দুই কিস্তিতে এবং বাকী অর্ধেক এমওপি সার শেষ কিস্তি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের সময় প্রয়োগ করতে হবে ।
ইউরিয়া উপরি প্রয়োগের পর মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে । তবে এলসিসি ভিত্তিক ইউরিয়া সার প্রয়োগ করাই উত্তম ।
বালাই ব্যবস্থাপনা:
আগাছা দমনঃ
১. চারা রোপনের ৭-১২ দিনের মধ্যে পেসবেন ১৮ডব্লিউপি
(বেনসালফুরন মিথাইল+এসিটাক্লোর) একরে ২০০ গ্রাম/ সিরিয়াস (পাইরাজো সালফুরান ইথাইল) ১০ ডব্লিউপি একরে ৭৫ গ্রাম হারে স্প্রে করতে হবে অথবা একরে ১২৫-১৫০ গ্রাম হারে সারের সাথে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিলে আগাছা গজানোর সম্ভাবনা থাকবে না। এছাড়াও রিফিট, কমিট (প্রিটিলাক্লোর) ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. আগাছা গজিয়ে গেলে ১-৭ পাতা অবস্থায় সারপাস ২০এসসি বা কৃষ ৪০এসসি (বিসপাইরিব্যাক সোডিয়াম) ১০ লিটারে ০৩ মিলি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে । উল্লেখ্য জমিতে জমানো পানি থাকা যাবেনা ।
মাজরা পোকাঃ
১. একরে ৬-৮ কেজি অপটিমাস ৫জি অপটিমাস ৫জি
(ক্লোথিয়ানিডিন) চারা রোপনের ১৮-২০ দিন পর ৫ কেজি ইউরিয়া সারের সাথে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে।
২. চারা রোপনের ৪০-৪৫ দিন পর রিজেন্ট (ফিপ্রোনিল) ৫০এসসি ১.৫০মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে এবং ১৫-২০ দিন পর দ্বিতীয় স্প্রে করতে হবে।
দেখুন ভিডিওতে
কারেন্ট পোকা (বাদামী গাছ ফড়িং), পামরি পোকা, চুঙ্গি পোকা, সবুজ পাতা ফড়িংঃ
১. চারা রোপনের ৫০-৬০ দিন পর ১৬ লিটার পানিতে ২ গ্রাম পিমিডর বা কনফিডর ৭০ডব্লিউজি মিশিয়ে স্প্রে করলে এসব পোকার আক্রমনের সম্ভাবনা কমে যায়।
২. চারা রোপনের ৭০ দিনের মাথায় জমিতে কারেন্ট পোকা দেখা দেওয়া মাত্রই ১৬ লিটার পানিতে ৪৫ গ্রাম মিপসিন ৭৫ ডব্লিউপি মিশিয়ে স্প্রে করবেন । পোকার আক্রমনের ব্যাপকতা বুঝে ৫-৭ দিন পরপর স্প্রে করতে থাকবেন।
কারেন্ট পোকার সকল কীটনাশক অবশ্যই গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
আশপাশের ক্ষেতের সবাই মিলে একই দিনে স্প্রে করলে কারেন্ট পোকা দ্রুত দমন করা সম্ভব হয়।
ধানের খোল পোড়া রোগঃ
১. চারা রোপনের ৩০-৪০ দিন পর এবং ৫৫-৬০ দিন পর হেকোনাজল (হেক্সাকোনাজল) ৫ইসি অথবা কোগার (এজক্সিস্ট্রবিন+সিপ্রোকোনাজল) ২৮এসসি অথবা ডিফেন্স ৩৫ এসসি বা এমিস্টার টপ ০১ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে । তবে আক্রমনের ব্যাপকতা থাকলে ৫-৭ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করা যেতে পারে ।
দেখুন ভিডিওতে
ধানের ব্লাস্ট বা ঝলসানো রোগঃ
২. হেডলাইন টিম অথবা সেলটিমা + ডিফেন্স ৩৫এসসি ০২+০১ মিলি পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
দেখুন ভিডিওতে
১. এই রোগের আক্রমন থেকে নিরাপদ থাকার জন্য চারা রোপনের ৫০-৫৫ দিন পর সামার/ট্রুপার (ট্রাইসাইক্লাজল) ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮-১.০ গ্রাম/লিটার + ডিফেন্স ৩৫এসসি ০১ মিলি পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
অথবা
দেখুন ভিডিওতে
বিশেষ স্প্রেঃ
রোগমুক্ত ও ঝকঝকে উজ্জ্বল রং এর বীজ উৎপাদনের জন্য ধানের শিষ (দুধ অবস্থায়) ৮০ ভাগ হেলে যাওয়ার পর ওপাল ৭.৫ ইসি ২.৫ মিলি/লিটার অথবা কোগার (এজক্সিস্ট্রবিন+সিপ্রোকোনাজল) ২৮এসসি ০১মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে শিষ ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে ।
রগিংঃ
বীজের জমি থেকে সকল প্রকার বিজাত, অফ-টাইপ, আগাছা এবং খোলপঁচা ও লক্ষীর গু আক্রান্ত শিষ প্রভৃতি বেছে ফেলাকেই রগিং বলা হয় ।
রগিং এর সংখ্যা এবং সময়ঃ
কমপক্ষে তিনবার রগিং করতে হবে
প্রথমবার-সর্বোচ্চ কুশি অবস্থায়, দ্বিতীয়বার- ধানের দুধ অবস্থায়, শেষবার- ধান কাটার ৭/৮ দিন আগে।
এছাড়াও মাঠ পরিদর্শনের সময় কোন বিজাতের গাছ দেখা গেলে তা তৎক্ষণাৎ উপড়ে ফেলতে হবে।
বি.দ্র. মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে পোকামাকড় ও রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ বেশি হয় ।