Header Ads

ad728
  • Breaking News

    How to control Chili thrips & mites (মরিচের পাতার কোঁকড়ানো রোগ কিভাবে দমন করা যায়)

    মরিচের পোকা মাকড় দমন ব্যবস্থা


    Chilli mites

    বিভিন্ন কারনে মরিচ গাছের পাতা কোঁড়ানো সমস্যা দেখা যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পাতায় মাইট বা ক্ষুদে মাকড় ও থ্রিপসের আক্রমণ। 


    ১. মরিচের মাকড়

    এদের পা ৮ টি বলে মাকড় বলে । বালিকণার মত ক্ষুদ্র বলে দেখা যায় না কিন্তু  এদের আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে।

    ক্ষতির ধরন
    ক) পাতার নিচের দিকে মাকড় বাসা বাধে এবং রস চুষে খায়। ফলে পাতা কুকড়ে যায়। 
    খ) পাতার নীচে থেকে রস চুষে খায় ফলে পাতার শিরার মধ্যকায় এলাকার বাদামী রং ধারণ করে ও শুকিয়ে যায়।
    গ) আক্রান্ত পাতা কুঁকড়িয়ে  যায় এবং কচি পাতার নীচের দিকে বেঁকে পেয়ালা আকৃতির হয়ে যায় ও পাতা সরু হয়।
    ঘ) ব্যাপক আক্রমণে পাতা ভেঙ্গে যায়।
    ঙ) ফলন ব্যাপকভাবে কমে যায়। 

    ------------------------------------------

    আরও পড়ুনঃ মিষ্টি মরিচের উৎপাদন প্রযুক্তি 
    ------------------------------------------



    ২. মরিচের থ্রিপস

    ক) নিম্ফ (বাচ্চা ) ও পূর্ণাঙ্গ পোকা পাতার উপরের দিকের রস চুষে খায় বলে পাতা কুঁকড়িয়ে যায় এবং অনেকটা  নৌকার মত দেখায়।  
    খ) পোকার আক্রমনে পাতা বাদামী রং ধারন করে। 
    গ) নতুন ও পুরাতন উভয় পাতায় আক্রমন করে।

    বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে








    মাকড় ও থ্রিপস দমন ব্যবস্থা

    ফেরোমন ফাঁদ + ট্রাইকোগ্রামা + ব্রাকন

    > এক কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ২০ লিটার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি (ছেকে নেওয়ার পর) পাতার নীচের দিকে স্প্রে করা।
    > পাইরিথ্রয়েড জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে।
    > আক্রমণ বেশি হলে অনুমোদিত মাকড়নাশক যেমন, ইন্ট্রাপিড ১০এসসি (ক্লোরফেনাপাইর), নোভাস্টার ৫৬ইসি (বাইফেনথ্রিন+এবামেকটিন), সায়েটা/লিকার/ভার্টিমেক ১.৮ইসি (এবামেকটিন), পিথিয়ন ৪৬.৫ইসি (ইথিয়ন) এর যে কোন একটি স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ভাইরাসের আক্রমণেও মরিচ গাছের পাতাকোঁকড়ানো রোগ দেখা যায়। এক্ষেত্রে আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। নাহলে অন্যান্য গাছেও ভাইরাস আক্রমণ করবে। সেইসাথে ভাইরাসের বাহক পোকা দমনের জন্য হেমিডর/কনফিডর ৭০ডব্লিউজি অথবা নোভাস্টার ৫৬ইসি কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় মাটিতে বোরন সারের অভাব হলেও পাতা কুকড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মাটিতে বোরন সার দিতে হবে।



    **মাকড়ের সাথে অন্য পোকার আক্রমণ দেখা দিলে প্রথমে মাকড়নাশক ব্যবহার করে অতপর কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

    ৩. এফিড বা জাব পোকা



    আক্রান্ত হওয়ার পর্যায়- মরিচ গাছের কচিও বয়স্ক পাতা
    ক্ষতির ধরন- সব ধরনের পাতার নীচের দিকে বসে রস শুষে খায় এমনকি এরা গাছের কান্ডেও আক্রমণ করে থাকে ফলে কান্ড শুকিয়ে মারা যায়।

    দমন ব্যবস্থা-
    > আঠালো হলুদ ফাঁদ (প্রতি হেক্টরে ৪০ টি) ব্যবহার করে।
    > আধা ভাঙ্গা নিম বীজের (৫০ গ্রাম এক লিটার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভেজানোর পর মিশ্রনটি ছাঁকতে হবে) নির্যাস আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করে এই পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    > বন্ধু পোকাসমূহ (লেডীবার্ড বিটলের পূর্নাঙ্গ ও কীড়া এবং সিরফিড ফ্লাই) প্রকৃতিতে লালন।

    > আক্রমণ বেশি হলে স্বল্পমেয়াদী বিষক্রিয়ার ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি (ফাইফানন/সাইফানন/অন্য নামের) ১০ মিলি অথবা কুইনালফস ২৫ ইসি (করলাক্স/একালাক্স/কিনালাক্স/অন্য নামের) বা ডাইমেথয়েট (বিস্টারথোয়েট/টাফগর/অন্য নামে) বা কেরাতে ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি হারে বা সাকসেস ১০ লিটার পানিতে ১২ মিলি হারে স্প্রে করে এদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও ইমিডাক্লোপ্রিড সমৃদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

    ৪. সাদা মাছি
    আক্রান্ত হওয়ার পর্যায়- সাধারনতঃ কচি চারা গাছ আক্রমণ করে।

    ক্ষতির ধরন- কচি পাতার নিচে বসে রস শুষে খায় ফলে পাতা কুঁকড়ে যায়।

    দমন ব্যবস্থা-

    > সাবান-পানি ব্যবহার (প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ডিটারজেন্ট ) করে।
    > নিম বীজের নির্যাস (আধা ভাঙ্গা ৫০ গ্রাম নিম বীজ ১ লিটার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে) স্প্রে করা ।

    > আক্রমণ বেশি হলে পিমডির/ হেমিডর/কনফিডর ৭০ডব্লিউজি ০.২গ্রাম/লিটার অথবা নোভাস্টার ৫৬ইসি ০২মিলি/লিটার হারে) অথবা এডমায়ার ২০০ এসএল (১০ লিটার পানিতে ৫ মিলি হারে) স্প্রে করতে হবে।

    ৬. ফল ছিদ্রকারী পোকা
    আক্রান্ত হওয়ার পর্যায়- এই পোকা কচি ও বাড়ন্ত ফল ছেদ করে ভিতরে ঢুকে ফলের ভিতরের অংশ খেয়ে ফেলে।

    ক্ষতির ধরন- ফলের বৃন্তের কাছে একটি ক্ষদ্র আংশিক বদ্ধ কালচে ছিদ্র দেখা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত ফলের ভিতরে পোকার বিষ্ঠা ও পচন দেখা যাবে। পোকা আক্রান্ত ফল নিধারিত সময়ের পূর্বেই পাকে বা ঝড়ে পড়ে।

    দমন ব্যবস্থা-

    > ফেরোমন ফাঁদ (প্রতি বিঘায় ১৫টি) ব্যবহার করে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা ।

    > ডিম নষ্টকারী পরজীবী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ ও কীড়া নষ্টকারী পরজীবী পোকা, ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করে এদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    > আধভাঙ্গা নিম বীজ (৫০ গ্রাম এক লিটার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজানোর পর মিশ্রণটি ছাকতে হবে) নির্যাস আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পার ৩ বার স্প্রে করে এই পোকা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    > আক্রমণ তীব্র হলে বেশি মরিচ এ পোকা দ্বারা আক্রান্ত হলে রিজেন্ট ৫০এসসি / ডেনিটল ১০ ইসি/ রিপকর্ড ১০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০১ মি.লি. হারে অথবা এমামেকটিন বেনজয়েট ০১গ্রাম/লিটার হারে এগুলোর যে কোন একটি কীটনাশক প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে গাছের সমস্ত অংশ ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে করা।