Header Ads

ad728
  • Breaking News

    Papaya Pest and Disease Management (পেঁপের রোগ ও পোকা মাকড় দমন)



    পেঁপের রোগ ও পোকা মাকড় দমন


    ঢলে পড়া ও কান্ড পঁচা রোগঃ

    মাটি স্যাঁতস্যাঁতে থাকলে বীজতলায় চারা ঢলে পড়া এবং বর্ষাকালে কান্ডপচা রোগ দেখা দিতে পারে। এ রোগ হলে গাছের গোড়ায় বাদামি বর্ণের ভেজা দাগের সৃষ্টি হয় এর ফলে আক্রান্ত চারা গাছ ঢলে পড়ে এবং মরে যায়।

    প্রতিকারঃ
    ১। এ রোগ প্রতিকারের তেমন সুযোগ থাকে না। তাই প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা উত্তম। আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) মাসে বীজতলা তৈরি করতে হলে বীজ বপনের পূর্বে বীজতলার মাটি ভালভাবে শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সিকিউর/প্রোভ্যাক্স নামক ছত্রাকনাশক ২-৩ গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সাথে মিশিয়ে শোধন করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। জমি তৈরির পর ৬ সে.মি. পুরু করে শুকনো কাঠের গুড়া বা ধানের তুষ বীজতলায় বিছিয়ে পোড়াতে হবে। পরে মাটি কুপিয়ে বীজ বপন করতে হবে। বীজতলায় হেক্টরে ৫ টন হারে আধাপঁচা মুরগীর বিষ্ঠা ব্যবহার করতে হবে। বীজবপনের পূর্বে ১৫-২১ দিন জমিতে বিষ্ঠা পঁচানোর পর বীজ বপন করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে সিকিউর মিশিয়ে ড্রেঞ্চিং করে এ রোগের বিস্তার কমানো যায়। চারা লাগানোর ৩ সপ্তাহ পূর্বে হেক্টর প্রতি ৩ টন আধা পঁচা মুরগীর বিষ্ঠা অথবা ৩০০ কেজি খৈল জমিতে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালভাবে মিশাতে হবে। এতে কান্ডপঁচা রোগের উপদ্রব কম হবে। 

    ২। মারাত্নকভাবে আক্রান্ত চারা গাছ উঠিয়ে পুড়ে অথবা পুঁতে ফেলতে হবে।

    ৩। আক্রমন দেখা মাত্রই কোগার ২৮ এসসি বা স্কোর বা এমিস্টার টপ ০১ মি.লি হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে ছিটিয়ে দিলে সুফল পাওয়া যায়। এভাবে ৪-৫ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

    পাউডারী মিলডিউ
    এ রোগে পাতার উপর এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ফুলের গায়ে ধুসর বা সাদা পাউডারের আবরণ পড়ে। এ রোগে আক্রমনের কারনে ফলন কমে যায়।

    প্রতিকারঃ
    ১। আক্রান্ত গাছের মরা ডাল ও পাতা পুড়ে ফেলতে হবে।

    ২। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ৮০% সালফার বা ০১ গ্রাম কার্ন্ডোজিম মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করে এ রোগ দমন করা যায়।

    মোজাইক রোগ
    এ রোগ হলে আক্রান্ত গাছের পাতায় সবুজ ও হলুদ রংয়ের দাগ দেখা যায়। পাতা খর্বাকৃতির ও আকারে ছোট হয়। জাব পোকা ও সাদামাছি এ রোগ ছড়িয়ে থাকে।

    প্রতিকারঃ
    ১। আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে পুড়ে বা পুঁতে ফেলতে হবে।

    ২। বাহক পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি হারে বা ০.২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৫-৭ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

    ৩। জিংকের ঘাটতির জন্য মোজাইক লক্ষণ দেখা দিলে গাছের গোড়ায় গাছ প্রতি ১৫ গ্রাম জিংক সালফেট প্রয়োগ করলে এ সমস্যা দুরীভূত হয়। অথবা চিলেটেড জিংক ১.৫০ গ্রাম/লিটার হারে স্প্রে করতে হবে।

    এ্যানথ্রাকনোজ
    এ রোগের কারণে ফলের গায়ে বাদামী পচন রোগ দেখা দেয়। ফল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়। ফলের বোটার দিকে গোলাকার দাগ দেখা যায় যা কালো হয়ে পচন ধরে। 

    প্রতিকারঃ
    রোভরাল/পিডিয়ন/একরোবেট এমজেড/ডাইথেন এম-৪৫/হেমেনকোজেব/ইন্ডোফিল/নোভোফিক্স প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম অথবা কোগার বা নাভারা বা এমিস্টার টপ বা স্কোর বা ডিফেন্স ০১মিলি/লিটার হারে মিশিয়ে স্প্রে করে এ রোগ দমনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

    পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাসঃ 
    Leaf curl of papaya

    এ রোগ হলে পাতা কুঁকড়িয়ে এবং মুচড়িয়ে যায় এবং পত্রফলক ছোট হয়ে যায়। আক্রমণ তীব্র হলে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। জাব পোকার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়।

    পাতা কোঁকড়ানো ভাইরাস রোগ নিয়ন্ত্রণঃ 
    আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ বিস্তারকারী পোকা দমনের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার রোধ করা যায়।

    শিকড়গীট রোগঃ 
    এটি কৃমিজনিত রোগ। আক্রান্ত শিকড় ফুলে উঠে এবং গীটের সৃষ্টি করে। গাছ দূর্বল, খাট ও হলুদাভ হয়ে পড়ে। সাধারণত আক্রান্ত চারা, বৃষ্টি বা সেচের পানি ও কৃষি যন্ত্রপাতির সাহায্যে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। 

    শিকড়গীট রোগ  প্রতিকারঃ 
    শুষ্ক মৌসুমে জমি পতিত রেখে ২/৩ বার চাষ দিয়ে মাটি ওলট-পালট করে দেওয়া। রোপণের সময় গর্ত প্রতি ২৫ গ্রাম ফুরাডান ৫ জি প্রয়োগ করা। আধা পঁচা মুরগীর বিষ্ঠা ৩ টন/হেক্টর বা সরিষার খৈল ৩০০ কেজি/হেক্টর চারা লাগানোর ৩ সপ্তাহ পূর্বে জমিতে প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালভাবে মিশাতে হবে।

    পোকামাকড়


    মিলি বাগঃ 
    সাম্প্রতিক সময়ে মিলি বাগ পেঁপের একটি মারাত্মক পোকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আক্রান্ত পাতা ও ফলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের পাতা ও ফলে শুটি মোল্ড রোগের সৃষ্টি হয়। আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে গাছ মারা যেতে পারে।

    মিলি বাগ দমন ব্যবস্থাঃ
    আক্রমণের প্রথম দিকে পোকাসহ আক্রান্ত পাতা বা কাণ্ড সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম সাবান পানি অথবা নোভাস্টার ৫৬ইসি ০২ মিলি বা হেমিডর বা পিমিডর বা কনফিডর ৭০ডব্লিউজি ০২গ্রাম বা ইমিটাফ বা এডমায়ার ২০০ এসএল ০.৫০ মিলি প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ৫ থেকে ৭ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে  করতে হবে।

    2 comments: