Header Ads

ad728
  • Breaking News

    Sweet gourd cultivation (মিষ্টি কুমড়ার আবাদ)

    মিষ্টি কুমড়ার আবাদঃ
    কচি মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে এবং পাকা ফল দীর্ঘদিন রেখে সবজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। পরিপক্ক ফল শুষ্ক ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় প্রায় ৪-৬ মাস সংরক্ষণ করা যায়। মিষ্টি কুমড়া ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রনে কাজ করে
    মাটি
    চরাঞ্চলের পলি মাটিতে মিষ্টি কুমড়া ভালো ফলন হয়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোঁ-আশ বা এঁটেল দোঁ-আশ মাটি এর চাষাবাদের জন্য উত্তম। মিষ্টি কুমড়ার জন্য মাটির সর্বোত্তম অম্ল-ক্ষারত্ব ৫.৫-৬.৮।
    চাষের মৌসুম
    বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বছরের যে কোনো সময় মিষ্টি কুমড়ার বীজ বোনা যায়। শীতকালীন ফসলের জন্য অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বীজ বোনার উপযুক্ত সময়। তবে বীজ উৎপাদনের জন্য নভেম্বরের মধ্যভাগে বীজ বপন করা উত্তম।
    চারা উৎপাদন
    # পলিব্যাগে চারা উৎপাদন
    # পলিব্যাগে মিষ্টি কুমড়ার চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ৩X৪ ইঞ্চি (৮X১০(সে.মি) আকারের পলিব্যাগ ব্যবহার করা হয়।
    # অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য ছিদ্রযুক্ত পলিব্যাগে ব্যবহার করতে হবে।
    পলিব্যাগে বীজ বপন
    # প্রথমে অর্ধেক মাটি ও অর্ধেক গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। মাটিতে বীজ গজানোর জন্য “জো” নিশ্চিত করে (মাটিতে “জো” না থাকলে পানি দিয়ে “জো” করে নিতে হবে) তা পলিব্যাগে ভরতে হবে।
    # অতঃপর প্রতি ব্যাগে দুইটি করে বীজ বুনতে হবে। বীজের আকারের দ্বিগুণ মাটির গভীরে বীজ পুঁতে দিতে হবে।
    বীজের পরিমাণ
    মিষ্টি কুমড়া চাষের জন্য শতাংশ প্রতি ২.৫ গ্রাম পরিমাণ বীজের প্রয়োজন হয়।
    সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি (কেজি/ একর)
    সার পরিমানপঁচাগোবর/কম্পোষ্ট ২৪০০-৩২০০ কেজি, ইউরিয়া ৪০-৫০ কেজি
    টিএসপি ৬৫-৭৫ 
    কেজি, এমওপি ৫০-৬০ কেজি, জিপসাম ৩৫-৪০ কেজি
    দস্তা ৫ 
    কেজি, বোরিক এসিড ৩-৪ কেজি, ম্যাগনেশিয়াম ৮-১০ কেজি
    প্রয়োগ পদ্ধতি
    মূল জমি তৈরীর সময় জৈব সার, টিএসপি, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম ও বোরিক এসিডের অর্ধেক অংশ প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক জৈব সার, টিএসপি, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম ও বোরিক এসিড মাদায় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সমান তিনভাগে ভাগ করে বীজ বপনের সময় প্রথম ভাগ, ১৫-২০ দিন পর দ্বিতীয় ভাগ এবং ৩৫-৪০ দিন পর তৃতীয়ভাগ প্রয়োগ করতে হবে।
    চারা রোপন
    # চারা বয়সঃ বীজ গজানোর পর ১৫-১৬ দিন বয়সের চারা মাঠে লাগানোর জন্য উত্তম।
    # পলিব্যাগের ভাঁজ বরাবর ব্লেড দিয়ে কেটে পলিব্যাগ সরিয়ে মাটির দলাসহ চারাটি নির্দিষ্ট জায়গায় লাগিয়ে চারপাশে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিতে হবে। চারা লাগানোর পর গর্তে পানি দিতে হবে।
    জাতসমূহ
    সুপ্রিমা, সুইটি, ড্রিমগোল্ড, সলিড গোল্ড ও অন্যান্য জাত
    পোকামাকড় ও দমন ব্যবস্থাপনা
    মিষ্টি কুমড়ার মাছিপোকা
    ক্ষতির ধরণ 
    ১. এই পোকা মিষ্টি কুমড়ার কচিফল ও ফুলের মধ্যে প্রথমে ডিম পাড়ে।
    ২. পরবর্তীতে ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফল ও ফুলের ভিতর কুরে কুরে খায় যার ফলে ফল ও ফুল পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায়।
    ৩. এই পোকার আক্রমণের ফলে প্রায় ৫০-৭০ ভাগ ফল নষ্ট হয়ে যায়।
    দমন ব্যবস্থাপনা
    ১.আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে তা নষ্ট করে ফেলতে হবে।
    ২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ।
    ৩. সেক্স ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার
    ৪. মাছির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য বিষটোপ অত্যন্ত কার্যকর।
    ৫. রিজেন্ট ৫০ এসসি/ রিপকর্ড/ হেক্লেম দিয়ে স্প্রে করুন।
    রেড পামকিন বিটল
    ক্ষতির ধরণ 
    # পামকিন বিটলের পূর্ণবয়স্কপোকা চারা গাছের পাতায় ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে।
    # এ পোকা ফুল ও কচি ফলেও আক্রমণ করে।
    দমন ব্যবস্থাপনা
    # চারা আক্রান্ত হলে হাত দিয়ে পূর্ণবয়স্ক পোকা ধরে মেরে ফেলে।
    # ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার রাখা।
    # ইন্ট্রাপিড ১০ এসসি এই পোকা দমনে ১০০ ভাগ সফল/ মিপসিন দিয়ে স্প্রে করুন।
    জাবপোকা
    ক্ষতির ধরণ
    ১. জাবপোকার আক্রমণে মিষ্টি কুমড়ার বাড়ন্ত ডগা ও পাতা হলুদ হয়ে যায়। গাছ তার সতেজতা হারিয়ে ফেলে এবং ফলন গুরুতর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 
    ২. প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক জাবপোকা দলবদ্ধভাবে গাছের পাতার রস চুষে খায়। ফলে পাতা বিকৃত হয়ে যায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও প্রায়শ নিচের দিকে কোঁকড়ানো দেখা যায়।
    ৩. মেঘলা, কুয়াশাচ্ছন্ন এবং ঠান্ডা আবহাওয়ায় জাবপোকার বংশ বৃদ্ধি বেশি হয়। প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হলে এদের সংখ্যা কমে যায়।
    দমন ব্যবস্থাপনা
    ১. প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত পাতা ও ডগার জাবপোকা হাত দিয়ে পিষে মেরে ফেলা যায়।
    ২. প্রিমিডর বা হেমিডর ৭০ ডব্লিউজি /টলস্টার / নোভাস্টার স্প্রে করুন।
    ৩. বন্ধু পোকাসমূহ সংরক্ষণ করলে এ পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কম হয়।
    রোগবালাই ও প্রতিকার
    সাদা গুঁড়া রোগ বা পাউডারি মিলডিউ
    ক্ষতির লক্ষণ
    ১. রোগের প্রারম্ভে গাছের নিচের বয়স্ক পাতায় রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ক্রমশ উপরের পাতায় রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
    ২. প্রথমে পাতার উপর বিক্ষিপ্ত সাদা সাদা দাগের সৃষ্টি হয়।
    ৩. রোগ বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে দাগ আকারে বড় হতে থাকে এবং হলুদ বর্ণ থেকে বাদামী রঙ ধারণ করে।
    ৪. রোগের প্রকোপ বেশি হলে গাছের লতা ও কান্ড আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে সেই লতা ও পরে পুরো গাছই মরে যেতে পারে।
    দমন ব্যবস্থাপনা
    ১. রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লাউ ও কুমড়াজাতীয় আগাছা বিনাশ করতে হবে।
    ২. জমির আশে-পাশে কুমড়া জাতীয় যে কোন সবজি চাষ থেকে বিরত থাকা
    ৩. আগাম চাষ করে রোগের প্রকোপ কমানো যায়।
    ৪. প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম হেসালফ অথবা ১০ মিলি হেকোনাজল ১০-১৫ দিন পর পর স্প্রে করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
    ডাউনি মিলডিউ
    ক্ষতির লক্ষণ
    ১. এই রোগ শুধু পাতায় হয়। আক্রান্ত পাতায় নানা আকারের দাগ পড়ে। সাধারণত দাগগুলি কোণাকৃতি ও হলদে হয়।
    ২. দাগগুলি খুব তাড়াতাড়ি সংখ্যায় বৃদ্ধি পায় ও আকারে বড়ো হয়। পাতার নিচে দিকে দাগের উপরে বেগুনি রংয়ের ছত্রাক জন্মে।
    দমন ব্যবস্থাপনা
    ১. রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য লাউ ও কুমড়াজাতীয় আগাছা বিনাশ করতে হবে।
    ২. জমির আশেপাশে কুমড়া জাতীয় যে কোনো সবজি চাষ থেকে বিরত থাকা।
    ৩. আগাম চাষ করে রোগের প্রকোপ কমানো যায়।
    ৪. প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম হেসালফ অথবা ১০ মিলি হেকোনাজল অথবা হেমেনকোজেব ০৪ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর স্প্রে করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


    মিষ্টি কুমড়া