Header Ads

ad728
  • Breaking News

    Bottle gourd pest management (লাউ ও কুমড়াজাতীয় ফসলের রোগ-বালাই দমন ব্যবস্থা)

    লাউ ও কুমড়াজাতীয় ফসলের রোগ-বালাই দমন ব্যবস্থা


    পাউডারি মিলডিউ (Powdery mildew ) রোগ


    ১) এই রোগ প্রাথমিক দিকে গাছের বয়স্ক পাতায় লক্ষণ প্রকাশ পায়। ক্রমশঃ উপরের পাতায় রোগ ছড়িয়ে পড়ে। 
    ২) প্রথমে পাতার উপর বিক্ষিপ্ত সাদা সাদা দাগের সৃষ্টি হয়। রোগ বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে এই দাগ আকারে বড় হতে থাকে এবং বাদামী রঙ ধারণ করে। 
    ৩) একসময় পাতা নিস্তেজ হয়ে মরে যায়। রোগের প্রকোপ বেশী হলে গাছের লতা ও কাণ্ড আক্রান্ত হয়। 
    ৪) Erysiphae cichoracearum এবং Sphaerotheca fuliginea নামক ছত্রাকদ্বয়ের পাউডারি মিলডিউ রোগ হয়ে থাকে।

    পাউডারি মিলডিউ (Powdery mildew ) রোগ দমন


    ১) এই রোগ দমনের জন্য ক্ষেতের আশেপাশের যাবতীয় আগাছা ও বন্য গাছ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে হবে। রোগাক্রান্ত গাছের অংশ ভালভাবে সংগ্রহ করে পুড়িয়ে নষ্ট করতে হবে।
    ২) রোগের প্রাথমিক অবস্থায় গাছে গন্ধকচূর্ণ, কেরাথেন (Kerathane) অথবা মিলডেক্স (mildex) মাসে কমপক্ষে দুইবার করে ছিটালে রোগ প্রশমিত হয়।


    লাউয়ের ব্লোজম এন্ড রট রোগ



    আক্রান্ত গাছে প্রথমে কচি লাউয়ের নিচের দিকে পঁচন দেখা দেয়। ধীরে ধীরে পুরো ফলটিই পঁচে যায় । সাধারণত আম্লীয় মাটিতে বা ক্যালসিয়ামের অভাব আছে এমন জমিতে এ রোগ দেখা যায়।
    প্রতিকার
    ১. ক্ষেতে পরিমিত সেচ দেয়া ।

    ২. গর্ত বা পিট প্রতি ৫০ থেকে ৮০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করা ।
    ৩. একই জমিতে বার বার একই সবজি আবাদ করবেন না

    ৪. জমিতে শতাংশ প্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রয়োগ করলে পরপর আর তিন বছর প্রয়োগ করতে হবেনা।
    ৫. অম্লীয় বা লাল মাটির ক্ষেত্রে জমিতে শতাংশ প্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রয়োগ করা

    ৬. মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার ব্যবহার করা।
    মোজাইক 
    চারা অবস্থায় বীজ গজানোর পর বীজপত্র হলুদ হয়ে যায় এবং পরে চারা নেতিয়ে পড়ে। বযস্ক গাছের পাতায় হলুদ-সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইকের মতো দাগ দেখা যায়। দাগগুলো অসম আকারের। দ্রুত বড় হয়। আক্রান্ত পাতা ছোট, বিকৃত ও নিচের দিকে কোকড়ানো, বিবর্ণ হয়ে যায়। শিরা-উপশিরাও হলুদ হয়ে যায়। ফুল কম আসে এবং অধিক আক্রমণে পাতা ও গাছ মরে যায়। আক্রান্ত ফল বেঁকে যায় ও গাছের কচি ডগা জটলার মতো দেখায়। ফলের উপরি অংশ এবড়ো-খেবড়ো দেখা যায়।

    প্রতিকার ব্যবস্থা
    ১. আক্রান্ত গাছ দেখলেই প্রাথমিকভাবে তা তুলে ধ্বংস করা। ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার রাখা।
    ২. ক্ষেতে বাহক পোকা উপস্থিতি দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করে তা দমন করা।
    ৩. রোগাক্রান্ত গাছ থেকে কোনো বীজ সংগ্রহ ও ব্যবহার না করা।

    লাউয়ের মাছি পোকা
    এ পোকা লাউয়ের ফলের মধ্যে প্রথমে ডিম পাড়ে, পরবর্তীতে ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে ফলের ভেতরে খেয়ে নষ্ট করে ফেলে।

    লাউয়ের মাছি পোকা দমন ব্যবস্থা
    পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদঃ মাছি পোকর কীড়া আক্রান্ত ফল দ্রুত পচে যায় এবং গাছ হবে মাটিতে ঝরে পড়ে। পোকা আক্রান্ত ফল কোনোক্রমেই জমির আশেপাশে ফেলে রাখা উচিত নয়। পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেললে মাছি পোকার বংশবৃদ্ধি অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।

    সেক্স ফেরোমন ও বিষটোপ ফাঁদের যৌথ ব্যবহার 
    কিউলিওর নামক সেক্স ফেরোমন ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে মাছিপোকর পুরুষ পোকা আকৃষ্ট করা সম্ভব। পানি ফাঁদের মাধ্যমে ওই ফেরোমন ব্যবহার করে আকৃষ্ট মাছি পোকাগুলোকে মেরে ফেলা যায়। বিষটোপ ফাঁদে পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছি পোকা আকৃষ্ট হয় এবং ফাঁদে পড়ে মারা যায়। ১০০ গ্রাম পাকা মিষ্টি কুমড়া কুচি কুচি করে কেটে তা থেঁতলিয়ে ০.২৫ গ্রাম মিপসিন ৭৫ পাউডার অথবা সেভিন ৮৫ পাউডার এবং ১০০ মিলি পানি মিশিয়ে ছোট একটি মাটির পাত্রে রেখে তিনটি খুঁটির সাহায্যে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে বিষটোপের পাত্রটি মাটি থেকে ০.৫ মিটার উঁচুতে থাকে। বিষটোপ তৈরির পর ৩-৪ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করে তা ফেলে দিয়ে আবার নতুন করে তৈরি বিষটোপ ব্যবহার করতে হয়। সেক্স ফেরোমন ও বিষটোপ ফাঁদ কুমড়া জাতীয় ফসলের জমিতে ক্রমানুসারে ১২ মি. দূরে দূরে স্থাপন করতে হবে।

    পামকিন বিটল 
    পামকিন বিটলের পূর্ণ বয়স্ক পোকা চারাগাছের পাতায় ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খেতে খেতে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে এবং বয়স্ক গাছের পাতার শিরা উপশিরা গুলো রেখে সম্পূর্ণ সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। এ পোকা ফুল ও কচি ফলেও আক্রমণ করে।পামকিন বিটল দমন ব্যবস্থা 
    ১. চারা অবস্থায আক্রান্ত হলে হাত দিয়ে পূর্ণবয়স্ক পোকা ধরে মেরে ফেলতে হবে।
    ২. ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
    ৩. চারা বের হওয়ার পর থেকে ২০-২৫ দিন পর্যন্ত মশারির জাল দিয়ে চারাগুলো ঢেকে রাখলে এ পোকার আক্রমণ থেকে চারাগুলো বেঁচে যায়।
    ৪. আক্রমণের হার বেশি হলে চারা গজানোর পর প্রতি মাদার চারদিকে মাটির সঙ্গে চারাপ্রতি ২-৫ গ্রাম অনুমোদিত দানাদার কীটনাশক (কার্বফুরান জাতীয় কীটনাশক) মিশিয়ে গোড়ায় পানি সেচ দেয়।

    No comments