Disease management of okra (ঢেঁড়শের রোগ-বালাই ব্যবস্থাপনা)
ঢেঁড়শের রোগ-বালাই ব্যবস্থাপনা
ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকা
ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকা- বেগুনের বোঁটার নীচে ছোট ছিদ্র দেখা যায়। কচি ডগা ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত ফলের ভিতরটা ফাঁপা ও পোকার বিষ্ঠায় পরিপূর্ণ থাকে।
ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন ব্যবস্থা
এই পোকা দমন করা অত্যন্ত দুরুহ কাজ; সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিম্নরূপ:
১) নিমবিসিডিন, ৮০ এম এল/একর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
২) আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে মাটিতে পুতে ফেলুন এরপর রিজেন্ট ৫০এসসি (ফিপ্রোনিল) ও হেক্লেম ৫এসজি (এমামেকটিন বেনজয়েট) প্রতি লিটার পানিতে ০১মিলি ও ০১ গ্রাম করে মিশিয়ে স্প্রে করুন;
৩) ৩-৪ দিন পর হেক্লেম ৫এসজি ও নোভাস্টার ৫৬ইসি (বাইফ্রেনথ্রিন+এবামেকটিন) বা সায়েটা (এবামেকটিন) ( প্রতি লিটার পানিতে ০১ গ্রাম ও ০২ মিলি) মিশিয়ে স্প্রে করুন;
৪) মাঝে মধ্যে মার্শাল ২০ইসি (কার্বোসালফান) বা ট্রেসার ৪৫এসসি (স্পিনোসাড) বা বেল্ট (ফ্লুবেনডিয়ামাইড) দিয়ে স্প্রে করলে পোকার সহনশীলতা গড়ে উঠে না।
কখনো শুধু রিজেন্ট; শুধু হেক্লেম দিয়ে স্প্রে করুন এতে পোকার সহ্য ক্ষমতা সৃষ্টি হয়না; সফলভাবে দমন করার জন্য ৩-৪ দিন পরপর স্প্রে করুন;
মনে রাখবেন ফল সংগ্রহ করার পর বিকালে স্প্রে করতে হবে।
সাদা মাছি ও জাব পোকা
সাদা মাছি ও জাব পোকা- পূণবয়স্ক ও নিম্ফ উভয়েই পাতা, কচি কান্ড, ফুল ও ফলের কুঁড়ি, বোঁটা এবং ফলের কচি অংশের রস চুষে খায়। ফলে গাছ প্রথমে দুর্বল ও পরে হলুদ হয়ে যায়। গাছে ফুল ও ফল অবস্থায় আক্রমণ হলে ফুলের কুঁড়ি ও কচি ফল ঝরে পড়ে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে কচি ডগা মরে যায়।
সাদা মাছি ও জাব পোকা দমন ব্যবস্থা
১. আক্রান্ত পাতা, ডগা, ফুল পোকাসহ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
২. আক্রমণ বেশী হলে নোভাস্টার ৫৬ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০২মিলি অথবা পিমিডর বা হেমিডর ৭০ডব্লিউজি (ইমিডাক্লোপ্রিড) ০৩গ্রাম/১৫লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ঢেঁড়শের ফুল পঁচা ও ফল পঁচা রোগ দমন
একরোবেট এমজেড (ম্যানকোজেব+ডাইমেথোমরফ্) প্রতি লিটার পানিতে ০৪ গ্রাম অথবা ডিফেন্স ৩৫এসসি (কার্বেন্ডাজিম+ হেক্সাকোনাজল) প্রতি লিটার পানিতে ১.৫০ মিলি অথবা কোগার বা নাভারা বা কারিশমা ২৮এসসি বা স্কোর বা এমিস্টার টপ (প্রতি লিটার পানিতে ০১ মিলি) ৬-৭ দিন পরপর পর্যায়ক্রমে আলাদাভাবে স্প্রে করতে হবে।
ঢেঁড়শের হলুদ শিরা মোজাইক ভাইরাস রোগ
ঢেঁড়শের শিরা স্বচ্ছতা বা হলুদ শিরা মোজাইক (Vein clearing or yellow vein mosaic) রোগটি ভাইরাস (Virus) দ্বারা হয়ে থাকে। ভাইরাস আক্রান্ত ঢেঁড়শ গাছের সংগৃহীত বীজ বপনের ফলে এ রোগের বিস্তার হয়ে থাকে। আর্দ্র আবহাওয়ায় রোগাক্রান্ত বিকল্প পোষক হতে সাদা মাছি (Bemisia tabaci) দ্বারা এ রোগ ছড়ায়। পরাগায়নের রোগের বিস্তার মাধ্যমে ও কৃষি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এ রোগ সুস্থ গাছে বিস্তার লাভ করে।
রোগের লক্ষন
১) গাছের যে কোন বয়সেই এ রোগ হতে পারে।
২) ভাইরাস আক্রান্ত পাতার শিরাগুলি স্বচ্ছ হয়ে যায়।
৩) রোগ মারাত্মক হলে সম্পূর্ন পাতাই হলুদ বর্ণ ধারণ করে, পাতা ছোট হয় ও গাছ খর্বাকৃতি হয়।
৪) রোগাক্রমনের ফলে গাছে ফুল কম হয়, ফল আকারে ছোট, শক্ত ও হলুদাভ সবুজ রংয়ের হয়।
প্রতিকার
১) রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন-বারি ঢেড়শ ১ চাষ করতে হবে।
২) রোগাক্রান্ত গাছ দেখা মাত্র তুলে পুড়ে ফেলতে হবে
৩) পরবর্তী বছর বপনের জন্য আক্রান্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না
৪) সাদা মাছি দমনের জন্য নোভাস্টার ৫৬ইসি (বাইফেনথ্রিন+এবামেকটিন) ০২মিলি/লিটার অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক এডমায়ার বা ইমিটাফ বা গেইন প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি বা হেমিডর বা কনফিডর বা পিমিডর ৭০ডব্লিউজি ০.২গ্রাম/লিটার হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
No comments